শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ১০:০০ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক, একুশের কণ্ঠ:: সরকার সময় চাওয়ায় ‘মার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচি দুপুর থেকে পিছিয়ে বিকেলে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া, ১৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা এবং কর্মচারীদের ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতার দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে সচিবালয় অভিমুখে লংমার্চ করার কথা ছিল তাদের।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, সরকারের পক্ষ থেকে কিছুটা সময় চাওয়া হয়েছে। দ্রুতই এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত আসবে বলে জানানো হয়েছে। এ অবস্থায় ‘মার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচি পিছিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জোটের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী বলেন, ‘গত ১২ অক্টোবর শিক্ষকরা যখন প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নিলেন, তখন আপনারা ডাকলেন, আমরাও গেলাম। তারা বললেন, অর্থ উপদেষ্টা ও সচিব দেশে নেই, সেজন্য নাকি অপেক্ষা করতে হবে। অথচ আজকে উপদেষ্টা-সচিব ছাড়াই তারা বৈঠকে বসেছেন বলে জানতে পারলাম। ঠেলার নাম বাবাজি! উপদেষ্টা-সচিব ছাড়াই যদি বৈঠকে বসতে পারেন, তাহলে হাজার হাজার শিক্ষকদের তিনটা দিন কেন রাস্তায় রাখলেন?’
শহীদ মিনারে শিক্ষকদের চলমান অবস্থান কর্মসূচিতে দেওয়া বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ‘শুনতে পাচ্ছি কিছুটা কম বাড়িভাড়ি বাড়িয়ে শিক্ষকদের কোনোমতে থামাতে চাচ্ছেন। এটা শিক্ষকরা মানবে না। ছয় লক্ষাধিক শিক্ষক পরিবারের সঙ্গে বিদ্রোহ করবেন? দেখি কার কত বড় ক্ষমতা। স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, ২০ শতাংশ মানে ২০ শতাংশই, ১৫০০ মানে ১৫০০-ই, ৭৫ শতাংশ মানে ৭৫ শতাংশ। ১৯-এও হবে না, ১৪৯৯-এও হবে না, ৭৪-এও হবে না। যদি উল্টাপাল্টা সিদ্ধান্ত নেন, এ আন্দোলন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়বে।
এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট’ সারা দেশে কর্মবিরতি পালন করেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রেখে এসব দাবিতে তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন। পাশাপাশি প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি ও শিক্ষকদের ঢাকায় অবস্থান কর্মসূচিসহ সব আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়।
এর আগে গতকাল সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে অবস্থানরত শিক্ষক-কর্মচারীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। তার আগে গত রবিবার দুপুরে রাজধানীর প্রেস ক্লাব এলাকায় শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ করতে সাউন্ড গ্রেনেড, জলকামান ও লাঠিচার্জ করে পুলিশ।
এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে তারা ইতিবাচক। বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করছেন তারা। অফিসের বাইরেও দুই মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা বৈঠক করছেন।
উল্লেখ্য, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা জাতীয় বেতনস্কেল অনুযায়ী বেতন পান। তারা মূল বেতনের সঙ্গে মাসে ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। আর ১ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া পেতেন, যা বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা করা হয়েছে। এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা আগে বছরে ২৫ শতাংশ হারে বছরে দুটি উৎসব ভাতা পেলেও গত মে মাসে বাড়ানোর পর তারা ও এমপিওভুক্ত কর্মচারীরা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ হারে উৎসব ভাতা পাচ্ছেন।